'বাঙালি জাতির চিন্তা-চেতনায়, অনুভবে সার্থকভাবে শেখ মুজিবই উৎকর্ষতা আনয়ন করতে পেরেছিলেন। এটাই ছিল তার সর্বশ্রেষ্ঠ কৃতিত্ব। এ কারণেই শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির মন-মানসে জাতির জনক (ফাদার অব নেশন) হিসেবে অধিষ্ঠান লাভ করেছেন বলে হাইকোর্ট অভিমত প্রদান করেছেন। বাংলাদেশের 'প্রথম স্বাধীনতা ঘোষণা' সংক্রান্ত মামলায় হাইকোর্টের অভিমতে আরো বলা হয়, যেহেতু শেখ মুজিব একদিকে ছিলেন বাঙালি জাতিসত্তার স্রষ্টা ও জাতির পিতা, অন্যদিকে স্বাধীনতার ঘোষক এবং সর্বশ্রেষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধা। সে কারণেই হয়তো বাংলাদেশের একজন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি বলেছিলেন যে, তিনি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি। রায়ে বলা হয়, বাঙালির জন্য শেখ মুজিবের পরম মমত্ববোধ এবং তার অসামান্য সাংগঠনিক ক্ষমতাবলে তিনিই সেই প্রথম বাঙালি যিনি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে সমর্থ হয়েছিলেন এবং বাঙালি জাতির সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ নেতায় পরিণত হন।
বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক ও বিচারপতি মমতাজ উদ্দিন আহম্মেদকে নিয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়ে শেখ মুজিবুর রহমানের কীর্তিকে স্মরণ করে বলা হয়, ২৫ মার্চ রাতে শেখ মুজিব গ্রেপ্তার হন। তিনদিনের মাথায় তাকে পশ্চিম পাকিস্তানের কোন এক অজ্ঞাত স্থানে রাখা হয়। ২৫ মার্চ রাত থেকে তাকে বাংলাদেশের কোন ঘটনাই জানতে দেয়া হয়নি। ইতিমধ্যে তার ফাঁসির আদেশ হয়েছিলো। তিনি জানতেন না তার প্রিয় মাতৃভূমি বাংলায় কি হচ্ছে, বিশ্ব জনমতইবা কি বলে। কিন্তু তার ছিল অবিচল বিশ্বাস ও অটুট মনোবল। তিনি জানতেন না যে, বাঙালি জাতি সাহস ও আত্মমর্যাদার সঙ্গে নিজের মাতৃভূমি স্বাধীন করার জন্য মরণপণ যুদ্ধ করছে। তাদের প্রধান সেনাপতি এক হাজার মাইল দূরে অজ্ঞাত স্থানে, কিন্তু তারই নামে তারা জীবনপাত করছে। রায়ে বলা হয়, একটি দুর্বল ভেঙ্গে পড়া 'মাথায় খাটো বহরে বড়' কেরানী মনোবৃত্তিসম্পন্ন বাঙালি জাতিকে মুক্তিযোদ্ধায় রূপান্তর করাই ছিল শেখ মুজিবের সর্বশ্রেষ্ঠ কৃতিত্ব। এই কৃতিত্বকে স্মরণ করে হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়, 'শেখ মুজিবই ছিলেন বাঙালি জাতির একচ্ছত্র নেতা। তার নামেই মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। এ কারণে তিনিই ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধা।'
২০১০ (১৮) বিএলটি বিশেষ সংখ্যায় বর্ণিত এ রায়ে, ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি তারিখে ইন্দিরা গান্ধীর প্রদত্ত ভাষণ উলেস্নখ করে বলা হয়, এই বক্তৃতা থেকে এটা নিশ্চিতভাবে পরিষ্কার হবে যে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর
রহমান তার দেশবাসীকে স্বাধীনতা উপহার দেয়ার জন্য যে আশ্বাস প্রদান করেছিলেন, তা তিনি পালন করেছিলেন। এছাড়া তিনি তার সমগ্র জীবন উৎসর্গ করেছিলেন প্রথমে স্বায়ত্তশাসনের জন্য । এরপর ধাপে ধাপে স্বাধীনতার পথে বাঙালি জাতিকে নিশ্চিতভাবে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। অভিমতে আরো বলা হয়,
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের দুপুর হতে ৩০ মার্চ পর্যন্ত এম এ হান্নান, বেলাল মোহাম্মদ, আবুল কাশেম সন্দিপ বা মেজর জিয়াউর রহমান যারাই ঘোষণা দেন না কেন তাদের সকলের ঘোষণাই শুধু একজনের পক্ষ থেকেই হতে পারত যাকে পূর্ববতর্ী দুই যুগেরও অধিক সময় যাবৎ কমর্ী থেকে ছাত্রনেতা, ছাত্রনেতা থেকে আওয়ামী লীগ নেতা, তৎপর আওয়ামী লীগ প্রধান এবং জাতীয় নেতা হবার দীর্ঘ কণ্টকাকীর্ণ পথ পরিক্রম করতে হয়েছিল। এই দীর্ঘ পথে কারাগার হতে ভাষা আন্দোলন গড়ে তোলা, প্রথম মার্শাল ল এর পরে আওয়ামী লীগকে পুনর্গঠন করে ৬ দফার ন্যায় একটি বিপস্নবী কর্মসূচি সামরিক জান্তার উপর নিক্ষেপ করে গঙ্গা ঋদ্ধির বাঙালি জাতিসত্তা বা বাংলাদেশ ন্যাশনালিজমকে পাকিস্তানের আবরণে পুনজর্াগরণ করবার মত দু:সাহসী কাজ সাফল্যের সঙ্গে এবং নিপুনতার সঙ্গে তিনি করতে পেরেছিলেন। ফলে বাঙালি জাতি দেড় হাজার বছর পর নিজেদের জাতিগত সত্তা, আত্মমযর্াদা ও অহমিকাকে খুঁজে পেয়েছিল। এ কারণে ১৯৭১ সালে বাঙালি জাতি শুধু মার খায়নি, অতি অল্প সময়ে রুখে দাঁড়াতে পেরেছিল।
এছাড়া বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃতু্যদণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচজনের আপিল খারিজ করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের দেয়া ঐতিহাসিক রায়ে বলা হয়েছে, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা সভ্যতা ও মানবতার বিরুদ্ধে বিশাল অপরাধ। খুনিরা এমন একজন মানুষকে হত্যা করেছে যিনি শুধু একজন নেতাই নন, তিনি জাতির পিতা। ঘটনায় জড়িতরা শুধু একটি হত্যাকাণ্ডই ঘটায়নি নিরাপরাধ শিশু ও মহিলাদের হত্যার মাধ্যমে তারা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করেছে। হত্যা সব সময়ই বেআইনি, অনৈতিক ও পাপ। ইসলামসহ কোন ধর্ম হত্যাকে সমর্থন করে না। রায়ে বলা হয়, হত্যাকাণ্ডের শিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট যিনি জনগণের জন্য তার জীবনকে উৎসর্গ করেছিলেন। পাকিস্তানি স্বৈরশাসকদের কাছ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য স্বাধীনতার সংগ্রাম হয়েছিলো বঙ্গবন্ধুর অধীনেই। যে স্বাধীনতার ঘোষণা তিনি দিয়েছিলেন ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে। তার সেই ঐতিহাসিক ভাষণের তাৎপর্য ছিল আমাদের স্বাধীনতা অর্জন। যার সৃষ্টি একটি স্বাধীন বাংলাদেশ। রায়ে বলা হয়, খুনিরা যাকে হত্যা করেছে, তিনি শুধু একজন নেতাই নন তিনি আমাদের জাতির পিতা।
বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক ও বিচারপতি মমতাজ উদ্দিন আহম্মেদকে নিয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়ে শেখ মুজিবুর রহমানের কীর্তিকে স্মরণ করে বলা হয়, ২৫ মার্চ রাতে শেখ মুজিব গ্রেপ্তার হন। তিনদিনের মাথায় তাকে পশ্চিম পাকিস্তানের কোন এক অজ্ঞাত স্থানে রাখা হয়। ২৫ মার্চ রাত থেকে তাকে বাংলাদেশের কোন ঘটনাই জানতে দেয়া হয়নি। ইতিমধ্যে তার ফাঁসির আদেশ হয়েছিলো। তিনি জানতেন না তার প্রিয় মাতৃভূমি বাংলায় কি হচ্ছে, বিশ্ব জনমতইবা কি বলে। কিন্তু তার ছিল অবিচল বিশ্বাস ও অটুট মনোবল। তিনি জানতেন না যে, বাঙালি জাতি সাহস ও আত্মমর্যাদার সঙ্গে নিজের মাতৃভূমি স্বাধীন করার জন্য মরণপণ যুদ্ধ করছে। তাদের প্রধান সেনাপতি এক হাজার মাইল দূরে অজ্ঞাত স্থানে, কিন্তু তারই নামে তারা জীবনপাত করছে। রায়ে বলা হয়, একটি দুর্বল ভেঙ্গে পড়া 'মাথায় খাটো বহরে বড়' কেরানী মনোবৃত্তিসম্পন্ন বাঙালি জাতিকে মুক্তিযোদ্ধায় রূপান্তর করাই ছিল শেখ মুজিবের সর্বশ্রেষ্ঠ কৃতিত্ব। এই কৃতিত্বকে স্মরণ করে হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়, 'শেখ মুজিবই ছিলেন বাঙালি জাতির একচ্ছত্র নেতা। তার নামেই মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। এ কারণে তিনিই ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধা।'
২০১০ (১৮) বিএলটি বিশেষ সংখ্যায় বর্ণিত এ রায়ে, ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি তারিখে ইন্দিরা গান্ধীর প্রদত্ত ভাষণ উলেস্নখ করে বলা হয়, এই বক্তৃতা থেকে এটা নিশ্চিতভাবে পরিষ্কার হবে যে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর
রহমান তার দেশবাসীকে স্বাধীনতা উপহার দেয়ার জন্য যে আশ্বাস প্রদান করেছিলেন, তা তিনি পালন করেছিলেন। এছাড়া তিনি তার সমগ্র জীবন উৎসর্গ করেছিলেন প্রথমে স্বায়ত্তশাসনের জন্য । এরপর ধাপে ধাপে স্বাধীনতার পথে বাঙালি জাতিকে নিশ্চিতভাবে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। অভিমতে আরো বলা হয়,
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের দুপুর হতে ৩০ মার্চ পর্যন্ত এম এ হান্নান, বেলাল মোহাম্মদ, আবুল কাশেম সন্দিপ বা মেজর জিয়াউর রহমান যারাই ঘোষণা দেন না কেন তাদের সকলের ঘোষণাই শুধু একজনের পক্ষ থেকেই হতে পারত যাকে পূর্ববতর্ী দুই যুগেরও অধিক সময় যাবৎ কমর্ী থেকে ছাত্রনেতা, ছাত্রনেতা থেকে আওয়ামী লীগ নেতা, তৎপর আওয়ামী লীগ প্রধান এবং জাতীয় নেতা হবার দীর্ঘ কণ্টকাকীর্ণ পথ পরিক্রম করতে হয়েছিল। এই দীর্ঘ পথে কারাগার হতে ভাষা আন্দোলন গড়ে তোলা, প্রথম মার্শাল ল এর পরে আওয়ামী লীগকে পুনর্গঠন করে ৬ দফার ন্যায় একটি বিপস্নবী কর্মসূচি সামরিক জান্তার উপর নিক্ষেপ করে গঙ্গা ঋদ্ধির বাঙালি জাতিসত্তা বা বাংলাদেশ ন্যাশনালিজমকে পাকিস্তানের আবরণে পুনজর্াগরণ করবার মত দু:সাহসী কাজ সাফল্যের সঙ্গে এবং নিপুনতার সঙ্গে তিনি করতে পেরেছিলেন। ফলে বাঙালি জাতি দেড় হাজার বছর পর নিজেদের জাতিগত সত্তা, আত্মমযর্াদা ও অহমিকাকে খুঁজে পেয়েছিল। এ কারণে ১৯৭১ সালে বাঙালি জাতি শুধু মার খায়নি, অতি অল্প সময়ে রুখে দাঁড়াতে পেরেছিল।
এছাড়া বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃতু্যদণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচজনের আপিল খারিজ করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের দেয়া ঐতিহাসিক রায়ে বলা হয়েছে, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা সভ্যতা ও মানবতার বিরুদ্ধে বিশাল অপরাধ। খুনিরা এমন একজন মানুষকে হত্যা করেছে যিনি শুধু একজন নেতাই নন, তিনি জাতির পিতা। ঘটনায় জড়িতরা শুধু একটি হত্যাকাণ্ডই ঘটায়নি নিরাপরাধ শিশু ও মহিলাদের হত্যার মাধ্যমে তারা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করেছে। হত্যা সব সময়ই বেআইনি, অনৈতিক ও পাপ। ইসলামসহ কোন ধর্ম হত্যাকে সমর্থন করে না। রায়ে বলা হয়, হত্যাকাণ্ডের শিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট যিনি জনগণের জন্য তার জীবনকে উৎসর্গ করেছিলেন। পাকিস্তানি স্বৈরশাসকদের কাছ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য স্বাধীনতার সংগ্রাম হয়েছিলো বঙ্গবন্ধুর অধীনেই। যে স্বাধীনতার ঘোষণা তিনি দিয়েছিলেন ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে। তার সেই ঐতিহাসিক ভাষণের তাৎপর্য ছিল আমাদের স্বাধীনতা অর্জন। যার সৃষ্টি একটি স্বাধীন বাংলাদেশ। রায়ে বলা হয়, খুনিরা যাকে হত্যা করেছে, তিনি শুধু একজন নেতাই নন তিনি আমাদের জাতির পিতা।
No comments:
Post a Comment